Dhaka,  Wednesday
2 April 2025 , 01:26

Donik Barta

জনতার বাজার: রাজধানীর ছয় স্থানে শুরু, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে উদ্যোগ

repoter

Published At: 11:15:57pm, 18 January 2025

Updated At : 11:15:57pm, 18 January 2025

Photo: Collected

ছবি: Photo: Collected

ঢাকা জেলা প্রশাসন রাজধানীর ছয়টি স্থানে ‘জনতার বাজার’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে, যা নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং জনজীবনে স্বস্তি আনার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, মোহাম্মদপুর, গুলশান, মিরপুর, বাড্ডা ও ডেমরা এলাকায় এসব বাজার বসবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী দামে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দেওয়া হবে এবং বাজারের দাম বৃদ্ধির প্রভাব কমানো হবে।

শনিবার কামরাঙ্গীরচরের কুড়ারঘাট মেডিকেল মোড়ে এক মতবিনিময় সভায় ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, “ক্রেতাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল যে, কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্য আসা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হাত বদল হয়, যার ফলে পণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়।” এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রশাসন সরাসরি কৃষক এবং ভোক্তার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে ‘জনতার বাজার’ চালু করেছে।

তিনি আরও জানান, এই বাজারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ ছাড়া, রমজান মাসে এসব বাজারের মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে।

এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেন, এটি বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য একটি বড় সহায়িকা হবে। তবে পণ্যের সরবরাহ, বাজারের নিরাপত্তা এবং পরিমাণের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারা। ঢাকা জেলা প্রশাসক আরও জানান, এসব বাজারের মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে পণ্য সরবরাহ করা হবে এবং এর মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানো যাবে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বাজারের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে এবং বাজারের ব্যবস্থাপনা ও পরিবহন স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং বেকার যুবকদের দ্বারা পরিচালিত হবে।

এই বাজারে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি হবে। প্রাথমিকভাবে ঢাকার ছয়টি স্থানে এই বাজার বসলেও, পরবর্তীতে বাজারের পরিসর বাড়ানো হবে। বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে এবং সেখানে স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী ও বেকার যুবকদের সম্পৃক্ত করা হবে। পণ্যের দাম নির্ধারণে একটি নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুসরণ করা হবে, এবং ক্রেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পেমেন্ট করে একটি কোড পাবেন, যার মাধ্যমে তারা পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

ঢাকা জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বাজারে পণ্য ক্রয়ের জন্য শুধুমাত্র নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হবে। পণ্যের মূল্য নির্ধারণের সময় প্রকৃত পরিবহন খরচ এবং উদ্যোক্তাদের মুনাফা যোগ করে দাম নির্ধারণ করা হবে। যে কোনো চাষি বা উৎপাদক তাদের পণ্য সরাসরি এনেও বিক্রি করতে পারবেন। হিসাব সংরক্ষণ ও কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হবে, যা অনলাইনে পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য দেখাবে।

এদিকে, এই উদ্যোগে এলাকার মানুষ খুশি হলেও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, বাজার যেন কয়েকদিন পর বন্ধ হয়ে না যায়। তারা সাশ্রয়ী দামে সব ধরনের নিত্যপণ্য বিক্রির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, গুলশানে কেন এই বাজার বসানো হয়েছে, তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। যদিও গুলশান একটি উচ্চ আয়ের এলাকা হিসেবে পরিচিত, তবে এখানে জনতার বাজারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা রয়েছে।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে এবং এর মাধ্যমে রাজধানীর মানুষের খাদ্যপণ্যের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

repoter